মহান স্বাধীনতা দিবস আড়ম্বরপূর্ণভাবে পালনের লক্ষ্যে খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুকৃবি) পক্ষ থেকে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ি স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয়।
স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোঃ শহীদুর রহমান খান এর নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী ক্যাম্পাসে আনন্দ র্যালি, স্মৃতিসৌধের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন, সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভা এবং দোয়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে আলাদা আলাদা ভাবে স্মৃতিসৌধের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক সারোয়ার আকরাম আজিজ, রেজিস্ট্রার ডাঃ খন্দকার মাজহারুল আনোয়ার (শাহাজান), শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. মোঃ তসলিম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক ড. এম এ হান্নান, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সংগঠন নীল দলের পক্ষ থেকে সভাপতি ডাঃ মোঃ আশিকুল আলম ও সাধারণ সম্পাদক ড. মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম, বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা, শিক্ষার্থী ও কর্মচারীদের পক্ষ থেকেও শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করা হয়।
শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন শেষে ঐতিহাসিক ৫১তম মহান স্বাধীনতা দিবস উদ্যাপনের তাৎপর্য তুলে ধরে স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জাতীয় চার নেতা, বীর মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক-সমর্থক, বিদেশি বন্ধুসহ ভাষা আন্দোলন ও মহান মুক্তিযুদ্ধে নিহত সকল শহীদদের আত্মার শান্তি কামনা করে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোঃ শহীদুর রহমান খান বলেন, ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন অবসানের পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ‘৫২ এর ভাষা আন্দোলন, ‘৫৪ এর যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ‘৫৮ এর সামরিক শাসন বিরোধী আন্দোলন, ‘৬৬ এর ৬ দফা, ‘৬৯ এর গণঅভ্যূত্থান ও ১৯৭০ সালের ঐতিহাসিক নির্বাচনে সংগ্রামী সুদক্ষ নেতৃত্ব ও জয়ের মধ্য দিয়ে শেখ মুজিব হয়ে ওঠে বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা। বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রামের প্রতিটি অধ্যায়ে বঙ্গবন্ধুর নাম চিরভাস্বর হয়ে আছে। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে তাঁর ঐতিহাসিক ভাষণটি ইউনেসকো বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে, যেখানে বঙ্গবন্ধু সমগ্র মুক্তিকামী বাঙালী জাতির উদ্দেশ্যে দীপ্ত কন্ঠে ঘোষণা দিয়েছিলেন ‘এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম; এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম’। উক্ত কালজয়ী ঘোষণার মধ্যে লুকিয়ে ছিল ২৬ শে মার্চ স্বাধীনতার ঘোষণা ও পরবর্তী ১৬ই ডিসেম্বর ১৯৭১-এ মহান বিজয় দিবসের শুভ সূচনা।
তিনি আরও বলেন, ঐতিহাসিক এই দিনে আমাদের অঙ্গীকার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এঁর স্বপ্ন ও মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতার লক্ষ্য অনুযায়ী সোনার বাংলা আমরা গড়বোই। সেদিন আর বেশি দূরে নয়। বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শি নেতৃত্বে বাংলাদেশ অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে। আমরা জেগে রইবো বঙ্গবন্ধু’র আদর্শ বুকে নিয়ে। জেগে থাকবে মানুষ- প্রজন্মের পর প্রজন্ম- তাঁর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশে। ঐতিহাসিক ৫১তম স্বাধীনতা দিবসে গণতন্ত্র ও সরকারবিরোধী সকল ষড়যন্ত্র প্রতিহত করে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে দেশের চলমান উন্নয়ন ও গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা রক্ষা এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য এই মাহেন্দ্রক্ষণে সকলকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে দায়িত্ব পালন করার উদাত্ত আহবান জানাই।
খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. এম এ হান্নান এর সঞ্চালনায় আরও বক্তৃতা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক সারোয়ার আকরাম আজিজ, রেজিস্ট্রার ডাঃ খন্দকার মাজহারুল আনোয়ার (শাহাজান), শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. মোঃ তসলিম হোসেন, বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সংগঠন নীল দলের পক্ষ থেকে সভাপতি ডাঃ মোঃ আশিকুল আলম ও সাধারণ সম্পাদক ড. মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম, বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পক্ষ থেকে প্রশাসনিক কর্মকর্তা ফোরকান আহমেদ, শিক্ষার্থীদের মধ্যে মাহিরুল হক শিলং ও তানসেনুল ইসলাম। এর আগে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত ও গীতা পাঠের মাধ্যমে আলোচনা সভা শুরু করা হয়।
আলোচনা সভা শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আন্তঃ অনুষদীয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয় এবং বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।