প্রা ণের স্পন্দন বিরাজমান পৃথিবী নামক এই গ্রহ আমাদের আবাসভূমি। নৈসর্গিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি ধরিত্রী মাতা আলো-বাতাসে নিজ বুকে আশ্রয় দিয়ে আগলে রেখেছে আমাদের। সৃষ্টির এই সৌন্দর্যতম প্রকৃতির প্রতি আমরা সর্বদাই চিরঋণী। আমাদের সবার দায়িত্ব হলো ধরার এই প্রাকৃতিক পরিবেশকে সযত্নে রাখা। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয়, প্রতিনিয়ত আমরাই আমাদের প্রাকৃতিক পরিবেশ নষ্ট করছি। মানবসৃষ্ট বিভিন্ন কারণে আমাদের পরিবেশ প্রতিনিয়ত দূষিত হচ্ছে। বর্তমানে যে দূষণ সবচেয়ে বেশি পরিবেশের ক্ষতি করছে, সেটি হচ্ছে প্লাস্টিক দূষণ। বিশ্ব পরিবেশ দিবস ২০২৪ উপলক্ষ্যে ‘আমাদের পরিবেশ, আমরাই রক্ষা করব’ স্লোগান সামনে রেখে খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ অ্যান্ড ওশান সায়েন্সেস অনুষদের শিক্ষার্থীরা একটি ব্যতিক্রমি আয়োজন করে। তারা নিজ উদ্যোগে তিন জন শিক্ষক ও ১৯ জন সহপাঠীকে সঙ্গে নিয়ে বলুহর বাঁওড়ের প্লাস্টিকের বর্জ্য অপসারণ করেন। স্থানীয় জনগণও অনেক সহায়তা করেন। তারাও প্লাস্টিক দূষণ নিয়ে তাদের আশঙ্কা প্রকাশ করেন। খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওশানোগ্রাফি বিভাগের শিক্ষক দেবাশীষ পণ্ডিত বলেন, ‘বাঁওড়ের জলাশয়ের অল্প কিছু অংশ থেকেই সব মিলিয়ে প্রায় এক কেজি প্লাস্টিক বর্জ্য অপসারণ করেছেন। মাত্র ১০ বর্গমিটার এরিয়া থেকে প্লাস্টিকের প্যাকেট (৪৩টি), সিগারেটের প্যাকেট (১৪টি), ওয়ান টাইম প্লাস্টিক (১৩), প্লাস্টিকের বোতল (৫), মেটাল ক্যান (১), শপিং ব্যাগ (১), মিক্স পলিথিন (৫), জুতার সোল (১) এবং অন্যান্য অনেক ধরনের প্লাস্টিকের বর্জ্য পাওয়া যায়। এ সবই পরিবেশের জন্য হুমকিস্বরূপ।’ খুকৃবির ওশানোগ্রাফি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. জেসমিন আরা বলেন, ‘প্লাস্টিক দূষণের বিরুদ্ধে আমরা আজ থেকে কাজ শুরু করলাম। আমাদের সবার সচেতনতা প্রয়োজন।’ খুকৃবির একুয়াকালচার বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. মো. আসাদুজ্জামান মানিক বলেন, ‘জলজ পরিবেশ সংরক্ষণে সবার এগিয়ে আসা উচিত। আমাদের এই প্রচেষ্টা চলমান থাকবে।’ সামনে ছোট ছোট দল নিয়ে স্থানীয় জলাশয়ের বাস্তুতন্ত্রকে ধ্বংসের মুখ থেকে ফিরিয়ে এনে প্রাণ সংরক্ষণেও ভূমিকা রাখতে চান শিক্ষার্থীরা।